Type Here to Get Search Results !

প্রবাসে বাঙলা সংস্কৃতির প্রচারে এক মহৎ প্রয়াস.... 'এসো বাংলা শিখি '

 



প্রবাসে বাঙলা সংস্কৃতির প্রচারে এক মহৎ প্রয়াস....          'এসো বাংলা শিখি ' যার উদ্দ্যেশ্য ও কর্মসাধনা তার নিজ নামের মধ্যেই নিহিত। প্রবাসে বড় হয়ে ওঠা ছেলেমেয়েদেরকে বাংলা ভাষা, সংস্কৃতি ও তার ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়েছে এই 'এসো বাংলা শিখি' । সুদূর উত্তর আমেরিকাতে ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যের বে এরিয়ায় অবস্থিত এই স্কুলটি |  আমেরিকায় যেখানে বাংলা ভাষায় কথা বলার সুযোগ একেবারেই সীমিত সেখানে এই সব প্রবাসী বঙ্গসন্তানসন্ততিদের কাছে এই ভাষার গুরুত্ব বোঝা ভার ! বাংলা ভাষা এখানে কোথাও যেন অবহেলিত হয়ে থেকে যায় ।আর তাই ভাষাশিক্ষা দানের পাশাপাশি নানারকম সাংস্কৃতিক উৎসব-অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে ছাত্রছাত্রীদের নিয়মিত চর্চার মধ্যে রাখার চেষ্টা করা হয় , শিক্ষালাভে উৎসাহিত করা হয় ।গত ২৩শে মার্চ মহাসমারোহে পরিবেশিত হলো "এসো বাংলা শিখি" স্কুলের এক বৈচিত্রময় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান | এতে অংশগ্রহণ করেছিল স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা এবং অভিভাবকেরা | বাংলার কবি-সাহিত্যিকদের লেখা গান , কবিতা , নাটক ইত্যাদি নানান বিষয় নিয়ে সাজানো ছিল এদিনের দ্বিপ্রাহরিক অনুষ্ঠান | গত চার- পাঁচ মাস ধরে স্কুলের শিক্ষক- শিক্ষিকারা এই সকল ক্ষেত্রে স্বদায়িত্বে, সুকল্পিতভাবে ছাত্রছাত্রীদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে | নানান ব্যস্ততার মধ্যেও প্রত্যেকেই সপ্তাহান্তে মহড়ায় উপস্থিত থেকেছে, নিজেরদের প্রস্তুত করেছে | স্কুলের এক ছাত্রীর গাওয়া বিশ্বকবির লেখা "আজ ধানের ক্ষেতে রৌদ্রছায়ায় লুকোচুরির খেলা রে ভাই.. " গানটি দিয়ে সূচনা হয় এই বিশেষ অনুষ্ঠান | দিন প্রথমেই শৈলেনকুমার দত্তর লেখা নাটিকা 'দুধপুরীতে মিতুন' অবলম্বনে একটি মজার নাটক পরিবেশিত হয় যা সকলের মন জয় করে নেয় | তীর্থ চৌধুরীর সুদক্ষ পরিচালনা আর কচিকাঁচাদের অভিনয় দর্শকের কাছে বেশ সমাদৃত হয় | এরপর নানান একক উপস্থাপনার মাঝে পরিবেশিত হয় ছোটদের একটি সুমিষ্ট গানের অনুষ্ঠান 'সুরের দোলায়', এটির পরিচলনায় ছিল শ্রেয়া মাইতি পাল | যথেষ্ট প্রশংসিত হয় ছোটদের একটি অসাধারণ নৃত্য পরিবেশনা | যেন এ বসন্তের দুপুরে এক ঝাঁক রঙিন প্রজাপতি এসে রাঙিয়ে দিয়ে গেলো উপস্থিত সকল দর্শককে | এই সমগ্র নাচের অনুষ্ঠানটির পরিচালনায় ছিল সৃজা সান্যাল আর পিঙ্কি চ্যাটার্জী | স্কুলের এক শিক্ষিকা তনুশ্রীর কবিতাচর্চার ক্লাসের ছাত্রছাত্রীরা উপস্থাপন করে একটি চমৎকার আবৃত্তির আসর | কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, সুকুমার রায়, ভবানীপ্রসাদ মজুমদার , সুনির্মল বসু প্রভৃতি স্বনামধন্য কবিদের লেখা নানান ভিন্ন স্বাদের কবিতা শোনায় স্কুলের পড়ুয়ারা | এখানেই শেষ নয়, ছোটদের পাশাপাশি বড়রাও যোগ দিয়েছিলেন অনুষ্ঠানে , স্বর্ণালী বসাকের পরিচালনায় দুটি শ্রুতিনাটক পরিবেশিত হয় যথা - রাজশেখর বসুর লেখা 'রাজভোগ' আর বনানী মুখোপাধ্যায়ের লেখা 'জীবন যে রকম' |  এরপর কাকলি আর অমৃতার দ্বৈত পরিবেশনা ছিল বেশ মনোগ্রাহী | ওরা কথা ও কবিতা দিয়ে এঁকেছিল ভালোবাসার এক বর্ণময় রূপ যা এই সমগ্র অনুষ্ঠানটাকে এক অন্যমাত্রা দান করে |  বলা যেতে পারে , দর্শকদের রসবোধকে তৃপ্ত করে এই অনুষ্ঠানসূচির বৈচিত্রময়তা  | এখানকার আশেপাশের কয়েকটি স্কুলও অংশগ্রহণ করেছিল "এসো বাংলা শিখি"র এই আনন্দানুষ্ঠানে | অন্তিমে ছিল পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন | স্কুলের দুই কর্ণধার অর্পিতা রায় ভট্টাচার্য এবং প্রিয়াঙ্কা সেন দাস, এদের এই নিরলস কর্মভাবনা ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে আগামী প্রজন্ম বাংলা ভাষায় আরো দক্ষ ও সাবলীল হয়ে উঠুক এই শুভকামনা রইলো ।

Tags

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.