দুর্গাপুজোর দশমীর কয়েকদিন পরেই আসে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো। দেবী লক্ষ্মী ধন, সম্পদ ও সুখের দেবী হলেও, তিনি চঞ্চলা—অহংকার ও অনিয়ম দেখলেই সেখান থেকে সরে যান। তাই দুর্গাপুজোর পরেই তাঁকে আরাধনা করা হয়, যেন বিজয়ের আনন্দে কেউ অহংকারী না হয়ে ওঠে।
দুর্গাপুজোর সময় দেবী লক্ষ্মীও দুর্গার সঙ্গে মর্ত্যে আসেন। কিন্তু আশ্বিন মাসের পূর্ণিমা তিথিতে তাঁর আলাদা করে পুজো করা হয়, যা কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো নামে পরিচিত। এই দিনে, বিশ্বাস করা হয়, রাত বাড়লে লক্ষ্মীদেবী পেঁচার পিঠে চেপে ঘরে ঘরে যান এবং যাঁরা ধূপ, ধুনো জ্বেলে, মনের গভীর থেকে তাঁকে আহ্বান করেন, তাঁদের বাড়িতেই তিনি অধিষ্ঠান করেন।কিন্তু কেন দুর্গাপুজোর পরেই লক্ষ্মী পুজো করা হয়? পুরাণ অনুসারে,একবার দেবতাদের মধ্যে অহংকার বেড়ে গিয়েছিল। দেবরাজ ইন্দ্রের ঋষিদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারেও রুষ্ট হন লক্ষ্মীদেবী এবং দেবতাদের ত্যাগ করে পাতালে চলে যান। দেবতারা তখন তাঁদের জৌলুস ও সুখ হারিয়ে বিষ্ণুর শরণাপন্ন হন। বিষ্ণুর পরামর্শে সমুদ্রমন্থন করে দেবতারা আবার লক্ষ্মীদেবীকে ফিরিয়ে আনেন, এবং দেবতারা পুনরায় ফিরে পান তাঁদের সুখ ও ঐশ্বর্য।
এই কাহিনী থেকে বোঝা যায় যে, লক্ষ্মীদেবী অহংকার ও অলসতা দেখলে সেই স্থান ত্যাগ করেন। তাই, দুর্গাপুজোর বিজয়ের পরে, লক্ষ্মীপুজো করা হয় যাতে জয় বা আনন্দের ফলে কারও মধ্যে অহংকার বা আলস্য জন্ম না নেয়। লক্ষ্মীদেবীর একাগ্রচিত্তে আরাধনা করলে তবেই তিনি স্থির থাকেন এবং সুখ-সমৃদ্ধি বজায় থাকে।