ওপার বাংলায় কোজাগরী পূর্ণিমায় লক্ষ্মীপুজো ঘরে ঘরে পালন করা হয়। এই পূর্ণিমাকে শারদ পূর্ণিমা বা লক্ষ্মী পূর্ণিমাও বলা হয়ে থাকে। ২০২৪ সালে কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো পড়েছে ১৬ ও ১৭ অক্টোবর। প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে, এই রাতে মা লক্ষ্মী তাঁর বাহন পেঁচার পিঠে চড়ে ঘরে ঘরে আসেন এবং পূজার ফলে সুখ ও সমৃদ্ধি নিয়ে আসেন। লক্ষ্মী দেবীর বাহন সাদা পেঁচা, যাকে 'লক্ষ্মী পেঁচা' বলা হয়। হিন্দু ধর্মে প্রতিটি দেবতার নিজস্ব বাহন থাকে—যেমন দুর্গার বাহন সিংহ, সরস্বতীর রাজহাঁস, কার্তিকের ময়ূর, গণেশের ইঁদুর। লক্ষ্মী দেবী পেঁচাকে নিজের বাহন হিসেবে বেছে নেন। যদিও পেঁচাকে সাধারণত নিশাচর ও অশুভের প্রতীক বলে মনে করা হয়, পুরাণে তার অন্য রূপ পাওয়া যায়।
পেঁচাকে কেন লক্ষ্মীর বাহন বলে মনে করা হয় তার ব্যাখ্যা হিসেবে বলা যায় লিঙ্গপুরাণে বলা হয়েছে, পেঁচা জ্ঞানহীনতার প্রতীক নয়, বরং নিবিড় অন্ধকারেও আলোর দিশা খুঁজে নিতে পারে। পেঁচার দিব্যচক্ষু তাকে গভীর অন্ধকারে পথ দেখায়, যা জ্ঞানের প্রতীক। পুরাণের এক গল্প অনুসারে, বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টি হওয়ার পর দেবতারা মর্ত্যে এসেছিলেন এবং বিভিন্ন প্রাণী তাদের বাহন হতে চেয়েছিল। লক্ষ্মী দেবী ঘোষণা করেন, কার্তিক অমাবস্যার রাতে যে প্রাণী সবার আগে তাঁর কাছে পৌঁছাবে, সে হবে তাঁর বাহন। সেই রাতে পেঁচা তার তীক্ষ্ণ দৃষ্টিশক্তি দিয়ে দূর থেকে লক্ষ্মীকে দেখে প্রথমে তাঁর পায়ের কাছে পৌঁছায়। সেই থেকেই পেঁচা লক্ষ্মীর বাহন হয়ে ওঠে।
পেঁচাকে তাই অশুভের প্রতীক না মনে করে, জ্ঞানের প্রতীক হিসেবে গণ্য করা হয়। মা লক্ষ্মীর সঙ্গে পেঁচার উপস্থিতি ঘরে শান্তি ও সমৃদ্ধির বার্তা নিয়ে আসে।